UpDate

★★★ স্বপ্নায়ন পরিবারের সদস্য ফরম বিতরণ চলছে। যোগাযোগ- ফারুক ষ্টোর, উপজেলা গেট সংলগ্ন,শ্রীবরদী । অতবা www.facebook.com/sopnayon ★★★ আমরা উপস্থাপন করতে যাচ্ছি "স্বপ্নায়ন গ্রন্থাগার"। জ্ঞান অর্জনের জন্য পাঠাগার গড়ি, "পড়লে বই আলোকিত হই, না পড়লে বই অন্ধকারে রই । মোঃ জাহিদুল ইসলাম রিতন- তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক, স্বপ্নায়ন পরিবার ।

করোনাভাইরাস

করোনাভাইরাস: লক্ষ্মণ, চিকিৎসা ও সুরক্ষার উপায় কী, কতটা মারাত্মক, কোথা থেকে এলো, কোন প্রানী থেকে ছড়ালো?


একটি ভাইরাস- যা পূর্বে বিজ্ঞানীদের অজানা ছিল- এর মধ্যেই চীনে অনেক মানুষের ফুসফুসের মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্বের নানা দেশে এটি ছড়িয়ে পড়ছে।

ভাইরাসটি রোগীদের শরীরে নিউমোনিয়া তৈরি করছে, এমন একটি ভাইরাস সবসময়েই উদ্বেগজনক। 

ফলে সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা চরম সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন।

কিন্তু এটা কি আজকালের একটি প্রাদুর্ভাব নাকি আরো বিপজ্জনক কোন রোগের লক্ষণ?

ভাইরাসটা কী?

  চীনের কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, করোনাভাইরাসের কারণে সেখানে অসুস্থতা বা মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটেছে।

করোনাভাইরাস এমন একটি সংক্রামক ভাইরাস - যা এর আগে কখনো মানুষের মধ্যে ছড়ায়নি।

ভাইরাসটির আরেক নাম ২০১৯ - এনসিওভি বা নভেল করোনাভাইরসা। এটি এক ধরণের করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি।

২০০২ সাল থেকে চীনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার এ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৭৭৪জনের মৃত্যু হয়েছিল আর ৮০৯৮জন সংক্রমিত হয়েছিল। সেটিও ছিল এক ধরণের করোনাভাইরাস।

''সার্সের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এখনো আমরা ভুলতে পারিনি, ফলে নতুন ভাইরাসের প্রচণ্ড ভীতির তৈরি হয়েছে। কিন্তু এ ধরণের রোগ মোকাবেলায় আমরা এখন অনেক বেশি প্রস্তুত,'' বলছেন ওয়েলকাম ট্রাস্টের চিকিৎসক জোসি গোল্ডিং।

কোভিড-১৯

নতুন এই রোগটিকে প্রথমদিকে নানা নামে ডাকা হচ্ছিল, যেমন: 'চায়না ভাইরাস', 'করোনাভাইরাস', '২০১৯ এনকভ', 'নতুন ভাইরাস', 'রহস্য ভাইরাস' ইত্যাদি।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় কোভিড-১৯ যা 'করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

রোগের লক্ষ্মণ কী:

রেসপিরেটরি লক্ষ্মণ ছাড়াও জ্বর, কাশি, শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাই মূলত প্রধান লক্ষ্মণ।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অনেককে সার্স ভাইরাসের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে যা ২০০০ সালের শুরুতে প্রধানত এশিয়ার অনেক দেশে ৭৭৪ জনের মৃত্যুর কারণ হয়েছিলো ।

নতুন ভাইরাসটির জেনেটিক কোড বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এটি অনেকটাই সার্স ভাইরাসের মতো।

"আমরা যখন নতুন কোনো করোনাভাইরাস দেখি, তখন আমরা জানতে চাই এর লক্ষ্মণগুলো কতটা মারাত্মক। এ ভাইরাসটি অনেকটা ফ্লুর মতো কিন্তু সার্স ভাইরাসের চেয়ে মারাত্মক নয়," বলছিলেন এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মার্ক উলহাউস।

লক্ষ্মণগুলো কতটা মারাত্মক?

জ্বর দিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়, এরপরে শুকনো কাশি দেখা দিতে পারে। প্রায় এক সপ্তাহ পরে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। অনেক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হয়।

প্রতি চারজনের মধ্যে অন্তত একজনের অবস্থা মারাত্মক পর্যায়ে যায় বলে মনে করা হয়।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হালকা ঠাণ্ডা লাগা থেকে শুরু করে মৃত্যুর সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

''যখন আমরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত কাউকে দেখতে পাই, আমরা বোঝার চেষ্টা করি লক্ষণগুলো কতটা মারাত্মক। এটা ঠাণ্ডা লাগার লক্ষণগুলোর চেয়ে একটি বেশি, সেটা উদ্বেগজনক হলেও, সার্সের মতো অতোটা মারাত্মক নয়,'' বলছেন ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবরার অধ্যাপক মার্ক উলহাউজ।

বিশ্ব জুড়ে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা জারির কথা ভাবছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যেমনটি তারা করেছিল সোয়াইন ফ্লু এবং ইবোলার সময়।

রোগটি কতোটা মারাত্মক?

ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ৪১জন মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে। রোগের প্রকোপের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কম বলে মনে হলেও, এই পরিসংখ্যান নির্ভরযোগ্য নয়।

কিন্তু যেহেতু সংক্রমণ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বেশ খানিকটা সময় লাগে, ফলে আরো অনেক রোগী মারা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, রোগে আক্রান্ত হয়েছে, কিন্তু হাসপাতাল বা চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়নি, এমন রোগীদের সংখ্যা আসলে কতো, সেই তথ্য কারো জানা নেই।

কোথা থেকে এলো করোনাভাইরাস?

সবসময়েই নতুন নতুন ভাইরাস সনাক্ত হয়ে থাকে।

কোন একটি প্রাণী থেকে এসে এসব ভাইরাস মানব শরীরে বাসা বাধতে শুরু করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা ভাইরাসটি উৎস কোনো প্রাণী।
যতটুকু জানা যায়, মানুষের আক্রান্ত হবার ঘটনাটি ঘটেছে চীনের উহান শহরে সামুদ্রিক মাছ পাইকারি বিক্রি হয় এমন একটি বাজারে।

করোনাভাইরাস ভাইরাস পরিবারে আছে তবে এ ধরণের ছয়টি ভাইরাস আগে পরিচিত থাকলেও এখন যেটিতে সংক্রমিত হচ্ছে মানুষ সেটি নতুন।

বেশিরভাগ করোনাভাইরাসই বিপজ্জনক নয় কিন্তু আগে থেকে অপরিচিত এই নতুন ভাইরাসটি ভাইরাল নিউমোনিয়াকে মহামারীর দিকে ঠেলে দিতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাস বিশেষজ্ঞ জোনাথন বল বলছেন, ''আমরা যদি অতীতে মহামারিগুলোর দিকে তাকাই, এমনকি এটা যদি নতুন করোনাভাইরাসও হয়, এটা কোন একটা প্রাণীর শরীর থেকে এসেছে।''

সার্স ভাইরাস প্রথমে বাদুরের শরীর থেকে খট্টাশের শরীরে, এরপরে সেটা মানব শরীরে চলে আসে।

মধ্যপ্রাচ্যের ফুসফুসের রোগ মার্স ( পুরো নাম: মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম), যাতে ২৪৯৪জন সংক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৮৫৮ মারা গিয়েছিলেন, রোগটি নিয়মিতভাবে এক কুঁজওয়ালা উট থেকে মানব শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।

কোন প্রাণী থেকে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস?

একবার যদি ভাইরাসের উৎস প্রাণীটি সনাক্ত করা সম্ভব হয়, তাহলে রোগটি মোকাবেলা করা অনেক সহজ হয়।

করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্ক আছে চীনের উহায়ের দক্ষিণ সমুদ্রের খাবারের পাইকারি বাজারের সঙ্গে।

যদিও বেশ কিছু সামুদ্রিক প্রাণী করোনাভাইরাস বহন করতে পারে (যেমন বেলুগা তিমি), ওই বাজারটিতে অনেক জীবন্ত প্রাণীও থাকে, যেমন মুরগি, বাদুর, খরগোশ, সাপ- এসব প্রাণী করোনাভাইরাসের উৎস হতে পারে।

গবেষকরা বলছেন, চীনের হর্সশু নামের একপ্রকার বাদুরের সঙ্গে এই ভাইরাসের ঘনিষ্ঠ মিল রয়েছে।

এটা কতো দ্রুত ছড়াচ্ছে?

রোগীদের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সপ্তাহে প্রায় ৪০ থেকে ৮০০জন আক্রান্ত হচ্ছে। কিন্তু এই পরিসংখ্যানের মধ্যেও বিভ্রান্তি আছে।

বেশিরভাগ নতুন রোগী আগে থেকেই চীনে ছিল, শুধুমাত্র চীন তাদের নজরদারি বাড়ানোর পর সনাক্ত হয়েছে।

ফলে মহামারিটির বিস্তার সম্পর্কে খুবই কম তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেসব তথ্য উপাত্তের কথা বলা হচ্ছে, সম্ভবত এর চেয়ে বেশি মানুষ রোগটিতে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

চীনের বাইরেও যেভাবে রোগে আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ছে, তাই ধারণা করা হচ্ছে হচ্ছে চীনের সরকার আক্রান্তের যে সংখ্যা বলছে (প্রায় ৪০০০ রোগী), আসল রোগীদের সংখ্যা তার দ্বিগুণ। তবে তার মানে এই নয় যে, মহামারিটি দ্বিগুণ আকৃতির হয়ে গেছে।

যদিও এখনো রোগটির প্রাদুর্ভাব উহান কেন্দ্রিক, কিন্তু থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ফ্রান্স, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, নেপাল এবং যুক্তরাষ্ট্রে রোগী পাওয়া গেছে।

ভাইরাসটির কি পরিবর্তন ঘটতে পারে?

ভাইরাসটি কোন একটা প্রাণী থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং একজন থেকে আরেকজনের দেহে ছড়াতে ছড়াতে আবার নিজের জিনগত গঠনে সবসময় পরিবর্তন আনছে - যাকে বলে মিউটেশন।

➤সদা পরিবর্তনশীল করোনাভাইরাস কতটা বিপজ্জনক?
➤নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের?

 তাই এ ভাইরাস হয়তো আর কিছুদিনের মধ্যে আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, এমন আশংকা রয়েছে।

কিন্তু এ ভাইরাসটির প্রকৃতি এবং কিভাবেই বা তা রোধ করা যেতে পারে - এ সম্পর্কে এখনো বিজ্ঞানীরা বিশদভাবে জানার চেষ্টা করছেন।

সার্স বা ইবোলার মতো নানা ধরণের প্রাণঘাতী ভাইরাসের খবর মাঝে মাঝেই সংবাদ মাধ্যমে আসে। এই করোনাভাইরাস তার মধ্যে সর্বশেষ।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি হয়তো মানুষের দেহকোষের ভেতরে ইতিমধ্যেই 'মিউটেট করছে' অর্থাৎ গঠন পরিবর্তন করে নতুন রূপ নিচ্ছে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করছে - যার ফলে এটি আরো বেশি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।

এই ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেক জনের দেহে ছড়ায়। সাধারণ ফ্লু বা ঠান্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে ।

এক দশক আগে সার্স (পুরো নাম সিভিয়ার এ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিনড্রোম) নামে যে ভাইরাসের সংক্রমণে পৃথিবীতে ৮০০ লোকের মৃত্যু হয়েছিল সেটিও ছিল এক ধরণের করোনাভাইরাস।

এতে আক্রান্ত হয়েছিল ৮ হাজারের বেশি লোক।

ভাইরাসটি কিভাবে ঠেকানো যেতে পারে?

আমরা এখন জানি যে, ভাইরাসটি নিজে থেকে ধ্বংস হবে না। শুধুমাত্র চীনের কর্তৃপক্ষে নেয়া পদক্ষেপই এই মহামারীর অবসান ঘটাতে পারে।

ভাইরাস প্রতিরোধক করতে কোন ভ্যাকসিন বা টিকা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।
এই রোগ থেকে রক্ষার একমাত্র উপায় হলো অন্যদের মধ্যে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে না দেয়া।

যার মানে হলো:

➤মানুষজনের চলাচল সীমিত করে দেয়া।
➤হাত ধুতে সবাইকে সবাইকে উৎসাহিত করা।
➤স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতিরক্ষামূলক পোশাক পড়ে রোগীদের আলাদা আলাদা করে চিকিৎসা সেবা দেয়া

রোগীদের ভাইরাস রয়েছে কিনা তা জানতে এবং রোগীদের সংস্পর্শে আসা লোকদের সনাক্ত করার জন্যও গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড বা নজরদারি ব্যবস্থার প্রয়োজন।

বাংলাদেশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে:

এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে নিশ্চিত কোন রোগী শনাক্ত হয়নি। যদিও বাংলাদেশকেও বলা হচ্ছে উচ্চ-ঝুঁকির দেশ।

করোনাভাইরাস: কীভাবে শনাক্ত করছে বাংলাদেশ?

চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারী করার পর ২১শে জানুয়ারি থেকে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চীন থেকে আসা নাগরিকদের স্ক্রিনিং শুরু করে।

এরপর ৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশে যেকোনো পথে এবং প্রতিটি দেশ থেকে আসা সব যাত্রী স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হয় বলে দাবি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশে একমাত্র রোগতত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং গবেষণা ইন্সটিটিউট - আইইডিসিআর করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা কতটা উদ্বিগ্ন?

ড. গোল্ডিং বলছেন, ''আরো বেশি তথ্য পাওয়ার আগে পর্যন্ত, এই মুহূর্তে বলা কঠিন যে আমাদের আসলে কতটা উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত।''

''যতক্ষণ পর্যন্ত উৎস সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে না পারছি, ততক্ষণ পর্যন্ত এটা সহজ হবে না।''

অধ্যাপক বল বলছেন, '' মানব শরীরের প্রথমবারের মতো ছড়িয়ে পড়ছে, এমন যেকোনো ভাইরাস নিয়েই আমাদের উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত, কারণ এটা প্রথম সারির বাধা অতিক্রম করেই ছড়িয়েছে।''

একবার মানব কোষের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়ার এবং প্রতিলিপি তৈরির পরে এটা দ্রুত রূপান্তরিত হতে শুরু করে। ফলে এটা আরো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।''

''এই ভাইরাসকে আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না।''

রোগের কোন প্রতিষেধক অথবা চিকিৎসা আছে?

না, নেই।

তবে রোগটির প্রতিষেধক আবিষ্কারের কাজ চলছে। আশা করা হচ্ছে মার্স ভাইরাসের (সেটিও একটি করোনাভাইরাস) প্রতিষেধক আবিষ্কারে যে গবেষণাটি চলছিল, সেটির কারণে এই কাজ অনেক এগিয়ে যাবে।

মাস্ক পরে কি ঠেকানো যায়?

ভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার যেকোনো খবরের জন্য একটি দারুণ প্রতীকী ছবি হচ্ছে মাস্ক বা মুখোশ পরা কোন মানুষের মুখচ্ছবি।

বিশ্বের বহু দেশেই সংক্রমণ ঠেকানোর একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার। বিশেষ করে চীনে, যেখান থেকে শুরু হয়েছে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা, সেখানেও মানুষ বায়ুর দূষণের হাত থেকে বাঁচতে হরহামেশা নাক আর মুখ ঢাকা মুখোশ পরে ঘুরে বেড়ায়।

অবশ্য বায়ুবাহিত ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক কতটা কার্যকর সে ব্যাপারে যথেষ্টই সংশয়ে আছেন ভাইরাস বিশেষজ্ঞরা, যাদেরকে বলা হয় ভাইরোলজিস্ট।

মাস্ক পরে কি ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো যায়?

তবে হাত থেকে মুখে সংক্রমণ ঠেকাতে এই মাস্ক ব্যবহার করে সুফল পাওয়ার কিছু নজির আছে।

আঠারো শতকে প্রথম সার্জিক্যাল মাস্কের চল শুরু হয়। কিন্তু ১৯১৯ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির আগ পর্যন্ত এই মাস্ক আমজনতার হাতে এসে পৌঁছায়নি।

ওই মহামারিতে ৫ কোটির মত মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে সেন্ট জর্জেসের ডঃ ডেভিড ক্যারিংটন বিবিসিকে বলেন, "সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্ক বায়ুবাহিত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে যথেষ্ট নয়"।

"বেশিরভাগ ভাইরাসই" বায়ুবাহিত, তিনি বলেন, এবং এই মাস্কগুলো এতই ঢিলেঢালা থাকে যে এটা বায়ুকে ফিল্টার করতে পারেনা ঠিকঠাক। তাছাড়া যিনি এই মাস্ক ব্যবহার করছেন, তার চক্ষু থাকছে উন্মুক্ত।

তবে হাঁচি বা কাশি থেকে ভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কমাতে সাহায্য করতে পারে এই মাস্ক। আর হাত থেকে মুখের সংক্রমণের বিরুদ্ধেও কিছু সুরক্ষা এটা দেয়।

২০১৬ সালে নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি সমীক্ষায় বলা হয়, মানুষ প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২৩ বার হাত দিয়ে মুখ স্পর্শ করে।

ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের মলিক্যুলার ভাইরোলজির অধ্যাপক জোনাথন বল বলেন, হাসপাতালের মধ্যে একটি নিয়ন্ত্রিত সমীক্ষায় দেখা গেছে রেসপিরেটর হিসেবে তৈরি ফেস মাস্ক ইনফ্লুয়েঞ্জা ঠেকাতে পারে।


Collected by - Md. Zahidul Islam RitonRH

করোনাভাইরাস করোনাভাইরাস Reviewed by RitonRH on March 09, 2020 Rating: 5

No comments:

Thank You for your Comment

Powered by Blogger.